ডেস্ক নিউজ :: কুমিল্লার দেবীদ্বারে মক্তবে পড়তে আসা তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌনপীড়নের অভিযোগে উপজেলার বরকামতা উত্তরপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মো. নুরুল ইসলামকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে তাকে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে তিনি কুমিল্লার ৪ নং বিচারিক আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া বেগমের কাছে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দেয় বলে জানান দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান। গ্রেফতার ইমাম মো. নুরুল ইসলাম চান্দিনা উপজেলার নলপুলি গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে।
যৌনপীড়নে শিকার স্কুল ছাত্রীর মামা মেহেদী হাসানের দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, মাত্র কয়েকদিন আগে দেবীদ্বার উপজেলার বরকামতা উত্তরপাড়া কেন্দ্রীয় মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগদান করেন মোঃ নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু হুজুর। তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা ৮ বছর বয়সী তার ভাগ্নী রোববার সকাল ৬টায় উক্ত মসজিদের মক্তবে আরবী পড়তে যায়।
পড়ার ফাঁকে নুরু ওই ছাত্রীকে ডেকে তার পাশে বসিয়ে স্পর্শকাতর স্থানে ক্রমাগত জোরে জোরে চাপ দেয়। এ শিশুটির শরীরের স্পর্শকারত স্থানেরক্ত জমাটের কালচে দাগ তৈরি হওয়ায় শিশুটি বাড়ি ফেরার পর পরিবারের লোকদের ঘটনাটি জানায়।
পরে শিশুটির মামা তাকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার পর অভিযুক্ত ইমামের বিরুদ্ধে যৌনপীড়নের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় দেবীদ্বার থানার মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে সোমবার অভিযান চালিয়ে পুলিশ নুরু ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোরশেদ আলম অভিযান চালিয়ে আসামি নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামি অকপটে দোষ স্বীকার করে। পরে তাকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার হাজারীচক গ্রামের ৪র্থ শ্রেণীর এক ছাত্রী গত রবিবার ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাজারীচক পশ্চিম জামে মসজিদের মহল্লা পাঞ্জেগানা মসজিদের ইমাম হাসান আহমদ ওরফে আলী হোসেনকে (২৫) স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কলাকুটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রী রবিবার স্কুল ছুটির পর থেকে নিখোঁজ ছিলো। সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান মেলেনি। পরে রাত ৯টায় গ্রামের পাঞ্জেগানা মসজিদের ইমামের কক্ষে তল্লাশী চালিয়ে ইমামের খাটের নিচে হাত পা ও মুখ বাঁধা অচেতন অবস্থায় স্কুল ছাত্রী উদ্ধার করা হয়।
আটক ইমামকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে জকিগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হওলাদার জানান, স্কুল ছুটির পর সে মেয়েটিকে তার রুমে ডেকে নিয়ে যায় তার রুমে। পরে শরবতের সাথে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে খাওয়ায়। এরপর মেয়েটি অচেতন হয়ে গেলে সে তাকে ধর্ষণ করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। স্কুল ছাত্রীটিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেও জানিয়েছে, মসজিদের ইমাম তাকে ডেকে নিয়ে শরবত খাইয়েছে।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই মেয়েটির বাবা হাজারীচক গ্রামের জুবের আহমদ বাদী হয়ে শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা দায়ের করলে সোমবার পুলিশ আটক ইমামকে জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করে। পরে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।