মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজকান্দি গ্রামে তিন বখাটে যুবক কর্তৃক এক পিতৃহীন কিশোরীকে গণধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় নির্যাতিতা কিশোরীর মা সায়েরা বেগম বাদী হয়ে খালেদ মিয়া, শিপন মিয়া ও রহিম মিয়াকে আসামি করে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
কিশোরীকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নির্যাতিতা কিশোরীর মা বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কমলগঞ্জ থানায় কিশোরীর মা সায়েরা বিবির (৪৫) জানান, ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজকান্দি গ্রামের রুশন মিয়ার ছেলে খালেদ মিয়া (২২) দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাঘাটে তার কিশোরী মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো। মাঝে মাঝে কু-প্রস্তাবও দিত। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের কাছে বিচার প্রার্থনা করেও কোন লাভ হয়নি। কয়েকদিন পূর্বে কিশোরীর বড় বোন আমিনা বেগম (২৭) একটি সন্তানের জন্ম দেয়ায় সাহায্যকারী হিসাবে কিশোরী মেয়েকে সেখানে পাঠিয়েছিলেন তার মা।
এ সুযোগে আমিনা বেগমের বাড়িতে একা পেয়ে বখাটে খালেদ মিয়া সঙ্গীয় উত্তর কানাইদাশী গ্রামের সবর আলীর ছেলে শিপন মিয়া (২৩) ও রাজকান্দি গ্রামের মসুদ মিয়ার ছেলে রহিম মিয়া হানা দেয়। খালেদের নেতৃত্বে তিন বখাটে আমিনার বসতঘরে প্রবেশ করে জোরপূর্বক কিশোরীকে ধরে নেয়। এতে বাঁধা দিলে মারধর করে বখাটেরা আমিনা বেগমকে আহত করে। বখাটেরা কিশোরীকে ধরে টেনে-হিঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টাকালে কিশোরীর আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে তিন বখাটে পালিয়ে যায়। পরে রাতেই গ্রামবাসীরা গৃহবধূ আমিনা বেগম ও তার কিশোরী বোনকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুন্না সিনহা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আমিনা বেগম ও তার কিশোরী বোনের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি আরও বলেন, দুই বোনের শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।
অভিযোগ সম্পর্কে প্রধান অভিযুক্ত আসামি খালেদ মিয়া মুঠোফোনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িত নন। অহেতুক তাকে দায়ী করা হচ্ছে।
ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হান্নান বলেন, আসলে এই মেয়েরা অসৎ চরিত্রের অধিকারী। তারাই এ ঘটনাকে নাটক সাজাচ্ছে। অহেতুক তিন যুবককে দোষী করতে চাইছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসলামপুর ইউনিয়নের এক সদস্য অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খালেদ আসলেই খুবই দুষ্ট প্রকৃতির। সে তার সাথীদের নিয়ে রোববার রাতে আমিনা বেগমের বাড়িতে হানা দিয়ে তার কিশোরী বোনকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল। অভিযুক্তরা ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থক বলে চেয়ারম্যান উল্টো নির্যাতিতাদের চরিত্র হননের চেষ্টা করছেন।